খোদ ওয়াসাই নিজের কাছে নিজে খেলাপি

চট্টগ্রামের সরকারী বেসরকারী গ্রাহকের কাছে ওয়াসার পাওনা ১৩৯ কোটি

Passenger Voice    |    ১২:৫৭ পিএম, ২০২২-১২-১২


চট্টগ্রামের সরকারী বেসরকারী গ্রাহকের কাছে ওয়াসার পাওনা ১৩৯ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক ।। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী গ্রাহকের কাছে ওয়াসার বকেয়া পাওনা পড়ে আছে প্রায় ১৩৯ কোটি। এর মধ্যে খোদ ওয়াসাই নিজের কাছে নিজে খেলাপি হয়ে পড়েছে।  ওয়াসার নিজেদের বকেয়া ৫৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। অন্যান্য বিভিন্ন সেবাসংস্থাসহ সরকারি ৪৫ দপ্তরের কাছে ওয়াসার পাওনা প্রায় ১৭ কোটি টাকা। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বকেয়া শোধ করেনি সংস্থাগুলো। বারবার তাগাদা দিয়েও মিলেনি বকেয়া টাকা। ফলে বছর বছর বকেয়ার ভার বইছে সেবা সংস্থাটি। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি গ্রাহকের  সংস্থাটিতে বকেয়া জমা পড়েছে ১৩৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যেখানে চলতি বছরের জানুয়ারিতেও সংস্থাটিতে বকেয়ার পরিমাণ ছিলো মাত্র ৬৬ কোটি টাকা।

ওয়াসা বলছে, সরকারি সংস্থাগুলো প্রতি অর্থবছর ধরে বিল আদায় করে। কখনো বরাদ্দের অভাবে, আবার কখনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অনীহায় দিনদিন বকেয়া বাড়ছে। সহসা এর সমাধান না করলে বিধান অনুযায়ী পাওনা আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে সংস্থাটি।ওয়াসার তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পরেশনের বকেয়া ৯২ লাখ হাজার টাকা, সিডিএ বকেয়া বিল ৭৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পরিচালক দপ্তররে বকেয়া বিল কোটি লাখ ৭১ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বকেয়া বিল ৪৩ লাখ ৫৩ হাজার, বন্দর বকেয়া আছে ৮৮ হাজার ৬০০ টাকা খোদ ওয়াসার বকেয়া ৫৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা।

টিচার্স ট্রেনিং বকেয়া বিল লাখ হাজার টাকা, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল কলেজের বকেয়া বিল লাখ ৪৭ হাজার টাকা, চট্টগ্রামের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে বকেয়া আছে ৫৯ হাজার ৭৯৮ টাকা, চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের বকেয়া আছে ১৭ লাখ হাজার টাকা, প্রাথমিক গণ শিক্ষার বকেয়া বিল ৪৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা শিক্ষার বোর্ডের বকেয়া বিল ২৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

এছাড়াও অন্যান সরকারি দপ্তরের তুলনায় সব থেকে বেশি বকেয়া চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগের। গণপূর্ত গৃহায়ণের বকেয়া কোটি ৭৪ লাখ ৬৬  হাজার টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন অধিদপ্তরের বকেয়া বিল ৮১ লাখ টাকা ৪৩ হাজার, চট্টগ্রাম মেট্রপলিটন পুলিশের বিভিন্ন দপ্তর আবাসিক এলাকা মিলে বকেয়া ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, শিল্প দপ্তরের বকেয়া বিল ৭৮ লাখ হাজার টাকা, লাখ ৪৯ হাজার টাকা, , চট্টগ্রামের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দপ্তরের বকেয়া বিল ২০ লাখ ২৪ হাজার টাকা, পানি সম্পদ দপ্তরের বকেয়া বিল ১৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, রোড অ্যান্ড হাইওয়েস ডিপার্টমেন্টের বকেয়া কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার টাকাস্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায়ের বকেয়া বিল ২৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন দপ্তরের বকেয়া বিল ২৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রামের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বকেয়া বিল ২০ লাখ ২৪ হাজার টাকা, পানি সম্পদ দপ্তরের বকেয়া বিল ১৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, চট্টগ্রামের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় দপ্তরের বকেয়া বিল ১৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা, চট্টগ্রামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বকেয়া বিল লাখ ৪৮ হাজার টাকা, চট্টগ্রামে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৯১ হাজার টাকা, পরিবেশ বন জলবায়ুর বকেয়া বিল লাখ ১২ হাজার টাকা, বস্ত্র পাটের বকেয়া বিল লাখ হাজার টাকা, সমাজকল্যাণের বকেয়া বিল লাখ ৭৯ হাজার টাকা, চট্টগ্রামের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৪৭ হাজার টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর অধিদপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৪৮ হাজার টাকা, খাদ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দপ্তর অধিদপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৪১ হাজার টাকা, চট্টগ্রামে সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের দপ্তর অধিদপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৬২ হাজার টাকা, চট্টগ্রামে শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দপ্তর অধিদপ্তরের বকেয়া বিল লাখ ৩৬ হাজার টাকা, মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বকেয়া বিল লাখ ৩২ হাজার টাকা, তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বকেয়া বিল লাখ হাজার টাকা।

চট্টগ্রাম ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি আবাসিক পর্যায়ে বকেয়া আদায় যতটা সহজ সরকারি সংস্থা থেকে বকেয়া আদায়ে সময় লাগে। প্রধানত সরকারি সংস্থায় বরাদ্দের একটা বিষয় থেকে যায়। সময় মতো পর্যাপ্ত টাকা না আসলে তাদের বিল বাকি থেকে যায়। এই অবস্থায় বছরের পর বছর বিল জমতে থাকলে বিলেও অংক অনেকটায় বেড়ে যায়। তাই সব টাকা এক সাথে আদায় করতে অনেকটা সময় লেগে যায়।

তিনি আরও বলেন, ওয়াসার নিয়ম অনুসারে বকেয়া সময় মতো বিল পরিশোধ করা না হলে জরিমানা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওয়াসা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে বকেয়া আদায়ে জরিমানা কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে জানুয়ারি নাগাদ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম শুরু হবে। সুত্র: সি ভয়েস

পিভি/জেএম/ডেস্ক,